কুষ্টিয়ায় আড়াই লাখ টাকা জরিমানা গুণার পর বৈধ কাগজপত্রাদি ছাড়া আর ভাটা পরিচালনা করবেন না, এই মর্মে উপজেলা প্রশাসনের কাছে মুচলেকা দেন চার ইট ভাটা মালিক। তবে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অভিযানের পর তারা ফের অবৈধভাবে ভাটা পরিচালনা করছেন। এছাড়াও ভাটায় নিষিদ্ধ ড্রাম চিমনিতে জ্বালানি হিসেবে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। এতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও বৈধ ভাটা মালিকরা। তাদের ভাষ্য, প্রশাসনের মনগড়া অভিযানের ফলে বছরের পর বছর অবৈধ ভাটা গুলো পরিচালিত হচ্ছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ ও জনজীবন। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন বৈধ ভাটা মালিকরা। তারা অবৈধ ভাটা গুলো বন্ধের দাবি জানান।
জানা গেছে, বৈধ লাইসেন্স না থাকা, জ্বালানি হিসেবে কাঠ পোড়ানো ও নিষিদ্ধ ড্রাম চিমনি ব্যবহার করার অপরাধের গত বুধবার উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের কেশবপুরের সৈনিক ব্রিকসের মালিক আব্দুল করিম ও সাগর ব্রিকসের মালিক ওসমান গনি সাগরকে ৫০ হাজার করে এক লাখ টাকা, একই ইউনিয়নের হাঁসদিয়ার এমএসকে -১ ভাটার মালিক আবু বক্করকে ৫০ হাজার টাকা এবং চাঁদপুর ইউনিয়নের কাঁচিকাটা ব্রিজ এলাকার এসএসবি ভাটার মালিক নাজিম উদ্দিনকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় তারা বৈধ কাগজপত্রাদি ছাড়া আর ভাটা পরিচালনা করবেন না, এই মর্মে মুচলেকাও দেন। এদিন ইট প্রস্তুত ও ভাটা ব্যবস্থাপনা (নিয়ন্ত্রণ) আইনে আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম।
তবে মুচলেকা দেওয়া ভাটা গুলো ফের চালু করা হয়েছে। এতে নিষিদ্ধ ড্রাম চিমনিতে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। ভাটার চারিদিকে কৃষি জমি ও বিভিন্ন ফসলাদি।
এসময় কেশবপুর এলাকার সৈনিক ব্রিকসের মালিক আব্দুল করিম বলেন, অনেক ধারদেনা করে ভাটার ব্যবসা চালাচ্ছি। প্রায় ১৫০ জন শ্রমিক কাজ করে। সকলের কথা ভেবে অবৈধ জেনেও ফের ভাটা চালু করেছি।
এমএসকে-১ ভাটার মালিক আবু বক্কর বলেন, এবছর চালিয়ে এব্যবসা আর করবনা। একটু ছাড় না দিলে ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাবে। চাঁদপুরের কাঁচিকাটা ব্রিজ এলাকার এসএসবি ভাটার মালিক নাজিম উদ্দিন বলেন, প্রতিবছর জরিমানা, মুচলেকা দিয়েই চলছে ভাটা। দেখা যাক কতদুর কি হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যদুবয়রা ইউনিয়নের এক বৈধ ভাটা মালিক বলেন, অবৈধ ভাটার কারণে কোটি টাকা খরচ করে প্রতিবছরে লোকসানে পড়ছেন বৈধ ভাটাওয়ালারা। তিনি দ্রুত ড্রাম চিমনির ভাটা বন্ধের দাবি জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম মিকাইল ইসলাম বলেন, অবৈধ ভাটার বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযান চলমান রয়েছে। মুচলেকা দেওয়া ভাটা গুলো ফের চালুর বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :